Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

এবার একটু প্রেমিক প্রেমিকা সাজা যাক । "Mowdud's World"


এবার একটু প্রেমিক প্রেমিকা সাজা যাক । 

এবার একটু প্রেমিক প্রেমিকা সাজা যাক ।

এমন একটা মানুষ নাই------


এবার একটু প্রেমিক প্রেমিকা সাজা যাক ।  মওদুদ'স ওয়ার্ল্ড

 আমার তো এরম একটা মানুষ নেই, যে ট্রায়াল রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আমায় বলবে "এই জামাটা না, ওই জামাটা নাও"...আমার এরম একটা মানুষ নেই, যে ভারী ব্যাগ গুলো হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বলবে "এই তুমি সামনে হাঁটো তো, আমি ব্যাগগুলো নিচ্ছি".....।


 

আমার এরম একটা মানুষ নেই,যে রাস্তা পেরোনোর সময় বলবে "দুদিকটা দেখো, হাতটা শক্ত করে ধরো, লাফালাফি করো না".....
মানুষ সারাদিন ছোটাছুটি করলেও দিনের শেষে একটু ভালোবাসার আশ্রয় খোঁজে, যাদের এই আশ্রয় নেই কিংবা হারিয়ে গেছে তাদের ভেতরটা প্রতিদিন পুড়ে ছারখার হয়ে যায় একবার করে।

 

আমি দেখেছি যারা ভালোবাসে, যাদের ভালোবাসার মানুষ তাদের ছুঁয়ে থাকে সবসময়, তাদের ভেতর যে কোনো প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করার একটা চমৎকার ক্ষমতা থাকে।
তাদের চোখ গুলো জ্বলজ্বল করে আত্মবিশ্বাসে..।



 

=  অপেক্ষা ----

 

"আমায় একটু সময় দেবে আজ রাতে
"কথা বলবো শুধু"
বলার পরেও কিছু মানুষ দারুণ ভাবে
উপেক্ষা করতে পারে....।

 

"সরি, বেমালুম ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, মনে ছিল না!" পরের দিন সকাল বেলায় একটা টেক্সট পাঠিয়ে ফরম্যালিটি পূরণ করে কিছু মানুষ দিনের পর দিন হাত ছেড়ে পালায়....।

আমরা বেসিক্যালি চুপচাপ অপেক্ষা করি,
কিন্তু কখনোই ঘ্যানঘ্যান করি না, প্রতিটা অপেক্ষার ভেতর প্রিয় স্মৃতি জমতে থাকে....,।

একটা ভাত না খেয়ে গুমরে পড়ে থাকা দুপুর জমে, একটা জামাকাপড় ভিজে যাওয়া স্যাঁতস্যাঁতে বৃষ্টিমাখানো বিকেল জমে, একটা চিঠি লিখেও না পাঠাতে পারার আক্ষেপ জমে...।

প্ৰতিটা অপেক্ষার ভেতর বুকের গভীরে তোলপাড় করা স্মৃতি জমে......

চেনা রিংটোন একটা বার শুনতে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা জমে, ছাদের কোনায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা একটা রাত জমে....।

প্রতিটা অপেক্ষার ভেতর "তুমি" জমতে থাকো একটু একটু করে....।

চোখের জল শুকোনো এক একটা রোদ্দুর জমে প্রতিটা "তুমি" নামক অপেক্ষার ভেতর। ভেঙে চুরমার হওয়া আয়না দেখে চিৎকার করে হাসতে পারার অভিনয় জমে...

ভোরের হাওয়া গায়ে এসে লাগলে আজকাল বড্ড বুক চিনচিনে ব্যথা হয়, মনে হয় কোথাও ভেতর ভেতর একটা মানুষ মরে যাচ্ছে। ধূপের গন্ধে গোটা শহর ভরে যাচ্ছে, আর পেছনে স্মৃতির নামে ছড়িয়ে যাচ্ছে কিছু সাদা খই....।

অপছন্দের মানুষের কাছ থেকে সরে আসা যায়, মুখ ফিরিয়ে চলে যাওয়া যায়। কিন্তু প্রিয়জনের কাছে অবহেলা পেলেও মানুষ মুখ নামিয়ে পায়ের কাছে বসে থাকে.....।

মানুষ ভাবে, তাকে কুকুর না ভেবে প্রিয় মানুষটা ভুল করে কখনো যদি একবার ঈশ্বর ভেবে তাকে মাথায় তুলে নেয়.....।

কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে উপেক্ষা করে, সে কখনো অপেক্ষা করার ব্যথা বোঝেনি কোনোদিন....।




 

আমি প্রেমিকা খুঁজেছিলাম--

 

আমি প্রেমিকা খুঁজেছিলাম সূর্য ডোবা নদীর ধারে, রাস্তা পেরোনো অফিসের বাসে, ফুটপাথের ধারে চায়ের ভাঁড়ে, কলার উঁচু করা জামার ঘামে......।

আমি প্রেমিকা খুঁজেছিলাম চুল থেকে খুলে ফেলা ছোট্ট ক্লিপে, গাল ফুলিয়ে বসে থাকা চোখের জলে, বুক কাঁপানো গোলাপি ঠোঁটের হাসিতে....।

আমি প্রেম খুঁজেছিলাম চুড়ির শব্দে, মোটা বেল্টের ঘড়িতে, পায়ের শেকল খুলে উড়িয়ে দেওয়া আঙুলে, সন্ধে বেলায় একসঙ্গে খাওয়া চপ মুড়িতে।

আমি স্নেহ খুঁজেছিলাম ছাদে মেলা মায়ের ভেজা সুতির শাড়িতে, অভিমান খুঁজেছিলাম টুপ করে রোদ গিলে খাওয়া হঠাৎ নামা বৃষ্টিতে.....

অধিকার খুঁজেছিলাম বইয়ের ভাঁজে রাখা গোলাপে, ডাকবাক্সে পড়ে থাকা চিঠিতে, ছিঁড়ে ফেলা রুমালে....।

আমি অভিজ্ঞতা খুঁজেছিলাম বারান্দায় রাখা ঘুনে খাওয়া কাঠের চেয়ারে, স্মৃতি খুঁজেছিলাম দেওয়ালে টাঙানো মৃত বাবার ছবিতে....।

আমি শৈশব খুঁজেছিলাম কাঁচের গুলিতে, সাইকেলের কেটে যাওয়া চেনে, কাগজের নৌকায়, স্কুলের ব্যাগে, বল ভেঙে যাওয়া নীল পেনেতে.....

অবশেষে ভীষণ ক্লান্ত হয়ে নিজেই নিজের ছায়ায় বসে আমি আমার ভেতর ঈশ্বর খুঁজে চলেছি প্রতি মুহূর্তে....।

আমি আশ্রয় খুঁজে চলেছি প্রিয়জনের ছায়াতে.....।





 

           আমরা বোকা সেজে থাকতে ভালোবাসি,

 

আসলেই আমরা বোকা সেজে থাকতে ভালোবাসি, সব জেনেও চোখ বন্ধ করে থাকতে ভালোবাসি। আমরা জানি কাছের মানুষটা ভেতর ভেতর পাল্টে গেছে, তবুও আমরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাই না....।

একবার বিশ্বাস করতে শিখে গেলে আমরা অদ্ভুত ভাবে জীবন সম্পর্কে, প্রেম সম্পর্কে, সংসার সম্পর্কে উদাসীন হয়ে যাবো। তখন আমাদের কাছে কে থাকলো, কে না থাকলো! কে আমাদের ছেড়ে গেল, আর কে থালাভর্তি ভাত নিয়ে অপেক্ষা করলো, কোনোটাই ম্যাটার করবে না....।

আমরা উদাসীন হতে চাই না, তাই আমরা বোকার মতো মুখ ফিরিয়ে নেওয়া মানুষটার জন্যও শীতের রাতে ছাদে গিয়ে একলা দাঁড়াই.....

আমরা ভাবি, আমাদের শরীর খারাপের খবর পেলে মানুষটা হয়তো একবার ফোন করবে? শরীর কেমন আছে জিগ্যেস করবে?.....।

মুখ ফিরিয়ে চলে যাওয়া মানুষ কোনোদিন ফেরে না, এই কথাটা আমরা মানতে চাই না। আমরা ভোরের বেলায় পাশের বাগানে ফুল কুড়োনোর বাহানায় রাস্তার মাঝখানে গিয়ে দাঁড়াই, যদি মানুষটা সে পথ দিয়ে ফেরে....।

আমরা সারারাত গ্যালন গ্যালন মদ খাই, সিগারেট খাই, মানুষটার প্রোফাইল চেক করি, মেসেজ টাইপ করেও ডিলিট করি, মানুষটার প্রোফাইল পিকচারে কে কি কমেন্ট করলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি.....

রান্নায় বেশি নুন দিয়ে ফেলি, ভাত খেতে খেতে উঠে যাই, স্নান করতে করতে বাথরুমে মেঝেতে বসে হাউহাউ করে কাঁদি, তারপর চোখ লাল করে বাথরুম থেকে বেরোই...।

সবার কাছে লুকিয়ে রাখি, অথচ আমরা ভেতর ভেতর শূণ্য হয়ে যেতে থাকি, যেন মনে হয় বিয়ের পরের রাতে কোনো মেয়ের মাথা থেকে মুছে গেল সিঁদুর চিরদিনের মতো....।

যেন মনে হয় মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে যাওয়া ছেলেটা আর কোনোদিন ফিরলো না ঘরে, মেইন রোডে তার মাথা পিষে দিয়ে গেছে লরিতে.....

আমরা কিছুতেই মানতে চাই না, যে যায় সে ফিরলেও আর আগের মতো করে ফেরে না, মানুষটা পাল্টে যায়....।







          সম্পর্কে অধিকার বোধ রাখতে নেই,

 

সব সম্পর্কেই অধিকার বোধ রাখতে নেই,
ছাড়তে জানতে হয়।
এখন আমি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেছি,
ভীষণ জটিল করে ফেলেছি।
"আমি আপনাকে ভালোবাসি" এই সহজ কথাটাকে জটিল করে বলার মধ্যেও একটা আনন্দ আছে,
সেটা অনুভব করেতে জেনেছি।

এখন আর গভীরে জড়াইনা, বরং যে কোনো সম্পর্কেই উপর উপর ভেসে থাকি শুধু। কাউকে অধিকার দিইনা আমায় আঘাত দেওয়ার, লুকিয়ে লুকিয়ে একটা মানুষকে গোটা জীবন ভালোবেসে যাওয়ার মধ্যেও যে তৃপ্তি আছে, অনুভব করেছি তা। যেখানে অধিকার বোধ নেই, সেখানে আবেগ কম থাকে কিংবা থাকলেও তার বহিঃপ্রকাশ কম থাকে....।

কে বলেছে, আঘাত মানুষকে ভেঙে গুঁড়ো করে দেয়। একেবারেই না! আঘাত মানুষকে ভেঙে গুঁড়ো করে দেওয়ার পর, নিজেকে কিভাবে একটু একটু করে গুছিয়ে আবার শিরদাঁড়া উঁচু করে দাঁড়াতে হয়,
সেটা শেখায়।

জ্বরের ঘোরে তার নাম মনে মনে কিভাবে আওড়াতে হয় সেটা শেখায়, সূর্য ডোবার পরে কিভাবে নিজের ক্লান্ত ছায়ায় মাথা গুঁজে কাঁদতে হয়, সেটা শেখায়। আবার পরেরদিন লাল চোখ মুখ মুছে স্টেশন পেরোনো ট্রেনের ভিড়ে মিশে যেতে হয়, সেটাও শেখায়....।

আমি বরাবর ভালোবাসায় বিশ্বাসী একজন মানুষ, আমি জানি মানুষ একমাত্র ভালোবাসায় হাসতে হাসতে ঝুঁকতে জানে, হারতে জানে, কাঁদতে জানে, মরতে জানে, মারতেও জানে....।

মানুষ একমাত্র ভালোবাসতে শিখলেই ঈশ্বর হয়ে ওঠে। ঠিক যেভাবে এখানে নিজের শরীরের অঙ্গ দান করে একজন সাধারণ নারী ঈশ্বরী হয়ে উঠেছে তার স্বামীকে ভালোবেসে...।

যার সাথে একবার মন থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে নিই, তার সাথে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি স্বাভাবিক ব্যবহার করি আমি। একেবারেই বুঝতে দিইনা তার গুরুত্ব আমার কাছে ফুরিয়ে এসেছে....।
বরং হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিই সে আর পাঁচটা মানুষের মতোই আমার কাছে সাধারণ, কোনো আলাদা জায়গা নেই আমার ভেতর তার জন্য।

যদি ফোন করে বলে জ্বর হয়েছে , ডাক্তার দেখাতে বলি। রাস্তায় পড়ে গিয়ে হাত পা কেটে গেলে রেস্ট নিতে বলি, চাকরি পায়নি বলে ফ্রাস্ট্রেশন ঝাড়তে এলে পড়াশুনো করতে বলি। রোজ সময়ে খেতে ও ঘুমোতে বলি....।
বৃষ্টি হওয়ার কথা বললে ছাদে মেলা কাপড়ের কথা মনে করিয়ে দিই, ব্যস একজন মানুষ যেমন নরমালি একজন মানুষের সাথে কথা বলে ঠিক সেইরকম আচরণ করি।

 

আর যখন সে নিজে বোঝে, তখন ফিরতে বললেও ফিরতে পারিনা, আসলে সবকিছু গোছাতে নেই, ছেড়ে দিতে হয়, ফেলে দিতে হয়। কিছু ভুল কাজ অনেক ঠিক কাজের থেকেও বেশি কিছু শিখিয়ে যায়....।
দূরত্ব বাড়লে অভিমান বাড়ে, প্রেম মরে যায় ধীরে ধীরে। এতদিন পরে বুঝেছি সবাইকে যেমন ভালোবাসা যায়না তেমনি সবার উপর অভিমান করতে নেই....।
সবাই ভালোবাসার যোগ্য হয়না, তেমনি অভিমান করারও যোগ্য হয়না....




 

        কিছু মানুষ আদতেই বোবা হয়! 


কিছু মানুষ আদতেই বোবা হয়, বেশি কথা বললেই মানুষগুলো হাঁপিয়ে ওঠে, কারোর সাথেই গভীরে মিশতে চায় না, সবার সাথে একটা দূরত্ব বজায় রেখে চলে....,।

নিজের ফ্যামিলি মেম্বারদের প্রতি এবং যাদেরকে মোটামুটি কাছের মনে করে, তাদের প্রতি সব দায়িত্ব পালন করে।

বাবার জন্য খবরের কাগজ এনে দেওয়া থেকে শুরু করে, মায়ের জন্য রান্নার সবজি কেটে গুছিয়ে রাখা। গায়ে একশো দুই জ্বর নিয়েও কলেজের পরীক্ষার দিন প্রেমিকাকে সাবধানে দিয়ে আসা, প্রেমিকের জন্মদিনে লুকিয়ে লুকিয়ে রান্না করা...।

শাশুড়ি মায়ের মাথা টিপে দেওয়া, শশুর মশাইয়ের খাওয়ার জল ভরে দেওয়া, অফিসের সমস্ত মাইনে দিয়ে বোনের বিয়ে দেওয়া, পাকেটে মাত্র পঞ্চাশ টাকা রেখে পাশের বাড়ির জেঠিমার জন্য মাঝরাতে ওষুধ কিনে আনা, করোনার পেশেন্টদের নিয়ে ছুটোছুটি.....

সারাদিন ঘরের কাজ সামলানো, অফিসের ফাইল সামলানো, বাচ্চার দায়িত্ব সামলানো, প্রেমিকের আবদার মেটানো, প্রেমিকার অভিমান ভাঙানো সমস্তটা মন দিয়ে করে, কিন্তু এদের নিজেদের মনের খবর কেউ জানে না....।

এরা আসলে নিজেও জানে না কখন যেন দায়িত্ব পালন করতে করতে করতে করতে এরা ভুলে গেছে এদের জন্য একটা দিন ভীষণ জোরে বৃষ্টি নেমেছিল, এরা ভুলে গেছে এদের জন্যও কেউ একদিন ছাতা হাতে নিয়ে কোথাও একটা দাঁড়িয়েছিল...।

এরা ভুলে গেছে এদের জন্য একটা কাগজের নৌকা বানিয়ে কেউ একজন ভাসিয়ে দিয়েছিল, এরা ভুলে গেছে কেউ একজন ভাতের থালা নিয়ে অপেক্ষা করতে চেয়েছিল এদের জন্য.....।

এরা ভুলে গেছে কেউ একজন লুকিয়ে লুকিয়ে এই মানুষগুলোর নাম নিজের হাতে ট্যাটু করে লিখেছিল, এরা ভুলে গেছে এদের জন্যও কেউ কাঁদতে কাঁদতে ঘুমের ওষুধ নিয়ে শেষ চিঠিটা লিখে রেখে গিয়েছিল, এরা ভুলে গেছে এদের একটা বাচ্চাদের মতো নিরীহ চঞ্চল মন ছিল....।

এই মানুষগুলো প্রতিটাদিন হাসতে হাসতে জীবনটাকে এমনভাবে বাঁচতে শেখে, যে এদের ভেতর কোনো বিরক্তিবোধ নেই, কোনো জেদ নেই, কোনো গভীর অভিমান নেই, কোনো দুঃখ, যন্ত্রণা, আনন্দ, হাসি, কান্না, শোক নেই, এদের ভেতর একটা আবেগহীন অনুভূতি আছে, যার নাম দায়িত্ব.....

একবার কাছের মনে করে যার দায়িত্ব নেয়, নিজেদের উজাড় করে তার প্রতি সমস্ত দায়িত্ব পালন করতে জানে, প্রয়োজনে নিজের জীবনটুকুও দিয়ে দেয়, তবুও মুখ ফুটে "ভালোবাসি" বলে জড়িয়ে জাপটে ধরে না....।

তবুও যেন কাউকেই নিজের খুব কাছাকাছি ঘেঁষতে দেয় না, এমনকি মা বাবাকেও না...।

কাউকে ভালো লাগলেও একটা বারের জন্যও হাপিত্যেস করে সেই মানুষটার সাথে কথা বলতে চায় না, অপেক্ষা করে না, মানুষটার জন্য ঘ্যানঘ্যান করে না। অদ্ভুতভাবে নিজেদের প্রতিটা অনুভূতিকে দাবড়ে বকা দিয়ে চুপ করিয়ে দিতে জানে....।

নিজেদের চারিদিকে একটা গন্ডি কেটে রাখে, সেই গন্ডির ভেতর একটা চমৎকার জগৎ গড়ে তোলে, সেই জগতে সেই মানুষটা স্রেফ একা থাকে, একা রাজত্ব চালায়, একাই নিজের কথা শোনে, একাই কান্নাকাটি করে, একাই রুমাল কিনে চোখের জল মোছে, একাই নিজের কাঁধে হাত রেখে ঘুমিয়ে পড়ে....।

আসলে নিজের আবেগগুলো চেপে রাখতে রাখতে কখন যেন এই মানুষগুলোর প্রতিটা অনুভূতি অসাড় হয়ে যায়, নিজেরাও টের পায় না.....।

এই মানুষগুলো সহজেই সবাইকে ছেড়ে দিতে জানে, কাউকেই আটকে রাখতে চায় না। এদেরকে কেউ ঠকিয়ে চলে গেলেও, এরা কোথাও গিয়ে তীব্র চিৎকার করে প্রতিবাদ করে না....।

এদের ভেতর কোনো আফসোস নেই, কোনো আক্ষেপ নেই, শুধু একটা উপলব্ধি আছে, যে উপলব্ধি এই মানুষগুলোকে আবেগহীন করে তুলেছে....।

এরা একদিন একটা কোল চেয়েছিল, এরা একটা ছায়া চেয়েছিল, এরা একটা প্রশ্রয় চেয়েছিল, একটা ছাতা চেয়েছিল। আশ্রয় চেয়েছিল, কিন্তু কপালে জুটেছিল অপমান, অবহেলা, আর বিশ্বাসঘাতকতা.....।

এই চরম অভিজ্ঞতাগুলোই এই মানুষগুলোকে আবেগহীন করে তুলেছে একটু একটু করে...।




 


           ছেলেদের মধ্যে এক অদ্ভূত যাদু আছে। 


আমি জানি না মেয়েরা কোনোরকম জাদু করতে পারে কিনা! কিন্তু এটুকু জানি, ছেলেদের ভেতর একটা অদ্ভুত জাদু আছে, ছেলেদের ভেতর একটা আশ্চর্য জীবনশক্তি আছে, ছেলেরা জন্মের সময় নিশ্চই স্পেশাল কিছু খায় হয়তো....।

ছেলেরা অদ্ভুত ভাবে কান্না জমিয়ে রাখতে পারে, ছেলেরা ভয় পেলেও নিজের প্রিয়জনদের বাঁচানোর জন্য বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে পড়তে পারে হত্যাকারী, খুনি কিংবা রেপিস্টদের সামনে বিনা অস্ত্রেই ঠিক যেমনটা সিনেমায় দেখায়, সেরকমই....।

ছেলেরা অদ্ভুত ভাবে রোদে পুড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা প্রেমিকার জন্য গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে তিন তলা বাড়ির নীচে, পকেট খালি করে নিজের পছন্দের মানুষকে উপহার কিনে দিতে পারে, সারাদিন অফিস সেরে ভিড় বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে ফিরে প্রেমিকার জন্য সারারাত জাগতে পারে....।

ছেঁড়া জুতো পরে মাঝরাতে অসুস্থ মায়ের জন্য ওষুধ কিনে আনতে পারে, পেটে খিদে নিয়েও পাড়ার কুকুরটাকে নিজের টিফিন বক্সে পড়ে থাকা শুকনো রুটি দুটো খাইয়ে দিতে পারে....।

নিজেরা বৃষ্টিতে ভিজেও অন্যের মাথায় ছাতা ধরতে পারে, আর ডাটসে হাসতে হাসতে বলতে পারে "আমার কিছু হবে না, তোমার ঠান্ডা লেগে যেতে পারে, ছাতাটা নাও"......।

ছেলেদের বোধহয় কখনো শরীর খারাপ হয় না, ওরা অন্যের শরীর খারাপের সময় গোটারাত হসপিটালের বাইরে অপেক্ষা করতে পারে, কিন্তু নিজেদের শরীর খারাপ হলে নিজেরাই চুপচাপ সারিয়ে তোলে, মুখ ফুটে কাউকে বলতে পারে না...।

ভালোবাসার মানুষ ছেড়ে যেতে চাইলে একবার হলেও হাতটা টেনে ধরে বলে "আমায় ছেড়ে যেও না, তোমায় ছাড়া হয়তো বেঁচে থাকবো কিন্তু প্রতিদিন একবার হলেও রাতের বেলায় ভীষণভাবে মরে যাওয়ার ইচ্ছে হবে। প্লিজ আমায় ছেড়ে যেওনা".....।

কিন্তু যে যায়, তার ভেতর কোনো অনুভূতি থাকে না, সে বরং উল্টোদিকের মানুষটার সমস্ত অনুভূতিকে মেরে পিষে তার উপর দিয়ে হেঁটে যায়....।

আর ছেলেরা তারপর কিছুদিন লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদে, ফেসবুক টেসবুক ডিএক্টিভেট করে নিজের ভেতর ডুবে যায়, মদের বোতল কিংবা সিগারেটের ধোঁয়ায় সমস্ত মনখারাপ এক ঝটকায় উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, লেকিন কুছ দাগ বহত গেহরে হোতে হে.....।

কিছু ব্যথা, কিছু ক্ষত কোনোদিন মোছা যায় না, বৃষ্টি হলে, জোরে হাওয়া দিলে, ঝড় উঠলে বিশ্বাসঘাতক মানুষের কথা বেশি করে মনে পড়ে...।

ছেলেদের মনখারাপ হলেও টের পাওয়া যায় না, কারণ ওরা লোক হাসানোর জাদুমন্ত্র জানে, পরিস্থিতি শিখিয়ে দেয়.....।

ছেলেরা প্রেমে পড়লে প্রেমিকের চেয়েও বেশি পরিবার হয়ে উঠতে চায় কাছের মানুষটার কাছে....।

একটা পরিবারে যেমন মা, বাবা, ভাই, বোন, সবাই থাকে....।

ছেলেরা একাই মা, বাবা, ভাই বোনের দায়িত্ব পালন করতে চায়....।

প্রেমিকা বা স্ত্রীর কলেজের ফর্ম ফিলাপ থেকে শুরু করে বাজার উপচে শাক সবজি আনা থেকে শুরু করে, ভালো রান্না করে বউকে চমকে দেওয়ার থেকে শুরু করে, প্রেমিকার জন্মদিনে নিজের হাতে পায়েস বানিয়ে খাওয়ানোর থেকে শুরু করে শশুরবাড়ির প্রতিটা সুবিধে অসুবিধেয় মুখ বুজে নিজের সবটুকু দায়িত্ব পালন করে যায়.....।

হাফ প্যান্ট ছেড়ে ফুল প্যান্ট পরতে পরতে ছেলেরা একটা গোটা সংসারের দায়িত্ব নিতে শিখে যায়....।

যে ছেলেটা নিজের দাঁড়ি কাটতে গিয়ে গাল চিরে ফেলতো ব্লেড দিয়ে ভুল করে, সেই ছেলেটা শিখে যায় কোথায় চাল নুন তেল রাখা আছে, আর কোথায় রাখা আছে অফিসের ফাইল.....।

ছেলেরা অদ্ভুত ভাবে ভাঙা শিরদাঁড়া নিয়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে যেতে পারে, ছেলেদের ভেতর ক্লান্তি নেই, শুধু দীর্ঘনিঃশ্বাস আছে।

মাঝেসাঝে গভীর রাতে ওরা চিৎকার করে কেঁদে ওঠে, ভয় পায়, কাউকে আঁকড়ে জড়িয়ে ধরতে চায়, আঁচল টেনে ধরে বলতে চায় "আমায় একটু বুকে করে আগলে রাখতে পারো", তারপর কোলে মাথা রেখে কুঁকড়ে ঘুমিয়ে পড়তে চায় ওরা.......।

শুধু ছেলেদের বোঝার মতো একটা মানুষের খুব দরকার পড়ে..।




 



           প্রত্যেকেরই কেউ না কেউ থাকে !


আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এমন একটা মানুষ থাকে, যে কিনা হাত ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও তার জায়গাটা আমরা অন্য কাউকে কোনোদিন দিতে পারিনা। কিংবা হয়তো ইচ্ছে করেই দিইনা, দিতে চাইনা, তা সে অন্য কেউ এসে আমাদের যতই ভালোবাসুক না কেন, যতই আমাদের ব্যথা সারিয়ে দিক না কেন!

মানুষ স্বভাবতই আঘাত পেতে এবং ব্যথাটাকে নিজের ভেতর অক্ষত রাখতে ভালোবাসে। ব্যথাটা ধীরে ধীরে সময়ের মলমে ঠিক হয়ে গেলেই আবার নিজেই খুঁচিয়ে ঘা করে, কারণ মানুষ দুঃখ নিয়ে বাঁচতে বড় ভালোবাসে।

ওই অনেকটা মদের মতো, যার কোনো স্বাদ নেই, ভালো গুণ নেই, অত্যন্ত ক্ষতিকারক শরীরের পক্ষে, নেশা হয়, মাথা ধরে থাকে। কিন্তু মানুষ তো বরাবর নেশায় ডুবে থাকতে চায়, একটা ঘোরের মধ্যে বাঁচতে চায়, এই ঘোর কেটে গেলে আবার মদ খায়, আবার ঘোরের ভেতর ডুবে যায়।

এদিকে আবার আমরাই একটা মানুষ ছেড়ে গেলে অন্য একটা মানুষের আশ্রয় নিই, হালকা হতে চাই, নতুন মানুষের মনের ঘরে বসে কান্নাকাটি করতে চাই। আমরাই চাই সে এসে নিজের রুমাল দিয়ে আমাদের কান্না মুছিয়ে দিক, একটু শান্তি দিক, বুকে জড়িয়ে ধরুক, কপালে ঠোঁটে গালে চুমু খাক।

সারারাত আগলে বসে থাকুক, যেভাবে মৃত সন্তানের লাশ আঁকড়ে বসে থাকে মা, যদি বেঁচে ওঠে একবার! যে যায় সে কি আর ফেরে!

আমরা চাই আমাদের জ্বর এসেছে শুনলে সে যেন রাত জেগে ফোন ধরে রাখে, কিংবা কাছে এসে জল্পট্টি দেয়। মাছ খেতে গিয়ে গলায় কাঁটা আটকালে এঁটো হাত ধুয়ে যেন এক গ্লাস জল এগিয়ে দেয়, স্নান করার পর ভালো করে যেন মাথা মুছিয়ে দেয়।

এতটাই স্বার্থপর আমরা, স্রেফ নিজের টুকু ভাবি! একবারও ভাবি না, নতুন মানুষটারও অনুভূতিকে সম্মান করাটা দরকার, আর সেটা পুরোনো মানুষটাকে নিজের ভেতর বাঁচিয়ে যত্ন করে সাজিয়ে গুছিয়ে রেখে কখনো সম্ভব নয়।

আর যদি পুরোনো মানুষটাকেই আঁকড়ে ধরে থাকবে তবে ওই সো কল্ড টাইম পাসের জন্য অযথা নতুন একটা মানুষের ইমোশন নিয়ে না খেললেই তো পারে!

এটা কেন ভুলে যায় সবাই, ক্ষনিকের জন্য যার কোলে মাথা গুঁজতে চাইছে, সেও তো কোনো সময় তার বুকে মাথা গুঁজে কাঁদতে চাইতে পারে! আশ্রয় তো দুজনকেই দুজনের হয়ে উঠতে হয় তাইনা....

একজন শুধু দিয়ে যাবে, আর একজন নিয়ে যাবে কেন! "ভুলতে পারিনা" বলে কোনো কথা হয়না, মানুষ চাইলে সব পারে, পুরোনোকে একটা সময়ের পর ভুলতেই হয়, ছাড়তেই হয়।

আর যদি একান্তই না পারে সেই নেশার ঘোর থেকে বেরোতে, তবে একা থাকুক, প্লিজ অন্য একটা মানুষের আবেগ অনুভূতি গুলো অন্তত মূল্যহীন হবেনা তাতে....।




 

আর কাউকে ভালবাসা  যায় না --- 

 

প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে এমন একটা মানুষ আসে, যাকে ভালোবাসার পর আর কাউকেই কখনো ঠিক করে ভালোবাসা যায়না।
এমনকি সে চলে যাওয়ার পরও তার "না" থাকা টাকেও আমরা যত্নে ভালোবাসি, যেভাবে শীতেররোদে শুকোনো চাদর মানুষ জড়িয়ে রাখে নিজের গায়ে ঠিক সেভাবেই....।

 

যতদিন সে থাকে কাছে, বুকের ভেতর একটা অদম্য শক্তি কাজ করে, গোটা দুনিয়া জয় করার একটা জেদ কাজ করে।

মনে হয় এক লাফেই তার বাড়ির ছাদে চলে যাবো, তার ভেজা নাইটি বা ভেজা পাঞ্জাবির আড়াল থেকে তাকে লুকিয়ে দেখবো, কেমন করে সে চুলে হাত দিচ্ছে! কেমন করে সে ঠোঁট কামড়াচ্ছে, কেমন করে সে সিঁড়ি দিয়ে তাড়াহুড়ো করে নামছে! আহা, আস্তে আস্তে লেগে যাবে যে! আমরা মনে মনে বলি....।
প্রতিটা সম্পর্কের, প্রতিটা ভালো লাগার, ভালোবাসার একটা এক্সপেয়ারি ডেট থাকে ঠিক যেমন রোগ প্রতিষেধক ওষুধের ঠিক তেমনই.....।

তারপর সে যখন চলে যায়, আবছা হতে থাকে চোখের সামনে থেকে, মনে হয় যেন পেছন থেকে গিয়ে জাপটে ধরি, একবার বলি "শোনো না, আমার সাথে কি একেবারেই থাকা যায়না"!.....।
যে যায়, সে তার সবটা নিয়ে যায় তারসাথে আমাদেরও সবটা নিয়ে যায়, কেমন যেন আমাদেরকে কামড়ে নিংড়ে ছিবড়ে করে রেখে যায়।
এবার শুরু হয় তার "না" থাকার সিচুয়েশন গুলোকে ভালোবাসার প্রসেস, আমরা যেন সেই মানুষটাকেই রোজ ইমাজিন করে আমাদের সামনে বসাই ঘর অন্ধকার করে, তারপর কত গল্প করি....

-----ছেড়ে যখন যাবেই তবে ভালোবাসি বলেছিলে কেন?

-----বি প্র্যাকটিক্যাল! তখন তোমায় ভালো লেগেছিল তাই ভালোবাসি বলেছিলাম, এখন বুঝতে পেরেছি আমি তোমায় বন্ধুর মতো ভালোবাসি, প্রেমিক প্রেমিকার মতো না।

-----কিন্তু....কিন্তু আমার সবসময় যে মনে হতো তুমি আমায় ভালোবাসো খুব! এই যে আমি অন্য কারোর প্রসঙ্গে বললে তুমি মাথা গরম করে ফেলতে যে! আমি ইচ্ছে করে তোমায় খচানোর জন্য অন্যদের নাম নিতাম জানো তো! তুমি কেমন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠতে! আমার তখন হেব্বি ভালো লাগতো।

-----ভুল করেছিলাম! তোমার কাছে একটু বেশি সহজ হয়ে গেছি, জানিনা কেন! কিন্তু তোমার কাছে আসলে আমিও খুব হালকা হই, মনে হয় একটা জঙ্গলে বসে আছি, আমার চারপাশে একটা লোক নেই, কিচ্ছু নেই, কুয়াশা ভর্তি, ঠান্ডা ভীষণ। সামনে আগুন জ্বলছে, আমার গা হাত পা গরম হচ্ছে, চোখ বন্ধ করলেই ওসব সময় তোমায় দেখতে পাই সামনে, তোমার গা থেকে একটা একটা করে কাপড় সরে যাচ্ছে!...

----তাহলে আমাদের সম্পর্ক কী?
----জানিনা, তবে এটুকু জানি, আমরা কেউ কারোর জন্য পারফেক্ট নৈ, শুধু আমাদের মুহূর্ত গুলো পারফেক্ট ছিল। যখন তুমি ফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা বকে যেতে, আমি কিছুই শুনতাম না বিশ্বাস করো। তোমার গলার আওয়াজটা ভালো লাগতো, আর যখন ঢোক গিলতে, সেই সময়গুলো ভালো লাগতো, তাই ফোন ধরে বসে থাকতাম।
----চলে যেতেই হবে?
----হ্যাঁ। ভালো থেকো।
এভাবেই প্রতি রাতে তাকে কল্পনা করে তার "না" থাকাটাকে আমরা যাপন করি ভেতর ভেতর। মানুষ চলে গেলে অপেক্ষাদেরও পুড়িয়ে দিতে হয়, নাহলে সেই অপেক্ষারাই একটা গোটা মানুষকে গিলে খেয়ে নিতে পারে।





 


          এবার একটু প্রেমিক প্রেমিকা সাজা হোক---



আমার একসময়ের বেস্ট ফ্রেন্ড এবং কলেজের বন্ধু আমায় চুমু খেতে চেয়েছিল জড়িয়ে ধরে, বলেছিল "আমরা তো এতদিন বন্ধু আছি, এবার একটু প্রেমিক প্রেমিকা সাজা হোক"....।

আমি ওকে বন্ধু হিসেবে সত্যি খুব ভালোবাসতাম, ওর উপর নির্ভরশীল ছিলাম, ও না থাকলে আমার মনে হতো আমার মাথার উপর ছাদটাই নেই হয়তো।

কিন্তু ওকে প্রেমিক হিসেবে মানতে পারিনি, চেষ্টা করেছিলাম ওর কাঁধে মাথা রেখে শুয়ে থাকতে, ঠোঁটে ঠোঁট ঢুকিয়ে চুমু খেতে, হাত ধরে রাস্তা পেরোতে, প্রেমিকার মতো অধিকার ফলাতে, তবুও প্রেমিকাসুলভ কোনো অনুভূতি আমার ভেতর আসেনি...।

আবার ঠিক একই ভাবে আমি একজনের প্রতি প্রবল দুর্বল হই, ফেসবুকেই আলাপ, তারপর তার সাথে ওই দু চারদিন কলেজ স্ট্রিটে দেখা গুরুত্বপূর্ণ কাজে, দু কাপ কফি শেয়ার করা, টুকটাক কথা, তারপর বাড়ি ফেরা ব্যস....।

সে কিন্তু বাস স্ট্যান্ড অবধি পৌঁছে দেয়নি, চোখে চোখ রেখে চুল সরিয়ে দেয়নি, হাতে চুমু খায়নি, পিঠে হাত বোলায়নি, বাড়ি ফেরার পর একবারও জিজ্ঞেসও করেনি, "কিগো সাবধানে ফিরলে?"....।

না সে সারাদিন খাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করে, আর না ঘুমোতে বলে তাড়াতাড়ি রাত তিনটে অবধি জেগে থাকলে, তবুও তার প্রতি দুর্বল ভীষণ।

মনে হয় তার জন্য সমস্ত কাজ ফেলে অপেক্ষা করবো সারাদিন পিচফাটা রোদে, বেশি করে বৃষ্টিতে ভিজে নিজের জ্বর বাঁধাবো ইচ্ছে করে, যাতে সে একটু যত্ন নেয়, একবার জিজ্ঞেস করে "এখন শরীর টা কেমন! চোখ গুলো এত সুন্দর অথচ এত ক্লান্ত কেন?".....।

যেন একবার ওষুধ খেতে বলে, একবার বকা দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়, একবার যেন বলে "কতদিন তোমায় দেখিনা, চলো দেখা করি গঙ্গার পাড়ে"....।

বেসিক্যালি একটা কথা খুব ভালো করে বুঝি ভালোবাসা পাওয়ার জন্য বা দেওয়ার জন্য শুধু ভালোবাসা টুকুর প্রয়োজন আর কিচ্ছুর না। তাতে যদি উল্টোদিকের মানুষটা ভালোবাসে, তাহলে বাসবে নইলে বাসবে না, সরে যাবে।

কিন্তু ভালোবাসা প্রমাণ করার জন্য কোনোকিছুর দরকার পড়েনা, বিশ্বাস করুন কোনোকিছুর না।

কোনো টাকা পয়সা হীরে সোনা গয়না দিয়ে ভালোবাসার প্রমাণ দেওয়া যায়না। হ্যাঁ ভালোবেসে অবশ্যই কেউ কাউকে গিফট করতেই পারে, কিন্তু নিজের ভালোবাসা প্রুফ করার জন্য গিফট না করাই ভালো।

"আমি তোমার জন্য এই ওই করেছি, এতকিছু করলাম, তবুও তুমি আমায় ভালোবাসলে না, তুমি অমানুষ, ছোটলোক, এই দুনিয়ায় আমার মতো করে আর কেউ তোমায় ভালোবাসতে পারবে না".....।

এই জাতীয় কথাগুলো ভীষণ ভীষণ সস্তা, আচ্ছা ভালোবাসা কি হাটে বাজারে কিনতে পাওয়া মুড়ি মুড়কি! যে কেউ এসে উপযুক্ত দাম দিয়ে কিনে নিয়ে যাবে এবং প্রমাণ করবে ওই মুড়ি মুড়কির উপর অধিকার স্রেফ তারই আছে!

এই অনুভূতি যার প্রতি আসার ঠিক আসে, যার প্রতি আসার নয়, তার প্রতি আসেনা, জাস্ট আসেনা। আয়োজন করে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করে প্রেমিক প্রেমিকা সাজা যায়না, যার প্রতি এই শিহরণটা জাগে, সেটা এক ঝটকায় কিংবা দু এক কথায় জেগে যায়, যার প্রতি জাগেনা সারা জন্মেও পাশাপাশি শুয়ে থাকলেও জাগবে না।

তাই ভালোবাসলে চুপ করে ভালোবেসে যাও, একটু যত্ন নাও, ইশারায় বুঝিয়ে দাও ভালোবাসো তাকে কিন্তু প্লিজ প্রমাণ করতে যেওনা নিজের ভালোবাসা....।




          ( মওদুদ ওয়ার্ল্ডস)

Post a Comment

1 Comments