Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় স্থান 'এরিয়া ৫১' "Mowdud's World"



পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় স্থান 'এরিয়া ৫১'


পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় স্থান 'এরিয়া ৫১'   "Mowdud's World"




পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন ও রহস্যময় স্থানগুলোর মধ্যে 'এরিয়া ৫১' অন্যতম। আমেরিকার নেভাদা অঙ্গরাজ্যের এ স্থানটিকে ঘিরে রয়েছে অনেক আলোচনা-সমালোচনা এবং বিভিন্ন গল্পের উৎস। 
এরিয়া ৫১ আমেরিকার একটি গোপন সামরিক বাহিনীর অপারেশন ঘাটি। যার আয়তন ২৬,০০০ বর্গকিলোমিটার। এ এলাকায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দুর্ভেদ্য বেষ্টনীতে ঘেরা এ ঘাটির প্রবেশপথে লেখা আছে 'সংরক্ষিত এলাকার দিকে প্রবেশের চেষ্টা করলেই তাকে গুলি করা হবে'। 

তাই এই জায়গাটি নিয়েই বিশ্ববাসীর সবচেয়ে বেশি কৌতূহল। কি আছে এর ভেতর? কিইবা এমন কার্য সম্পাদন করা হয় এই ঘাটিতে, যার দরুন সেখানকার তালিকাভুক্ত কর্মীদের ছাড়া আর কাউকেই ঢুকতে দেয়া হয় না । এমন প্রশ্ন বিশ্ববাসীর মনে ঘুরপাক খাবে এটাই যেন স্বাভাবিক । 

আর 'এরিয়া ৫১' এমন এক সামরিক ঘাটি, যেখানকার কর্মীরা সরাসরি প্রেসিডেন্টের কাছে দায়বদ্ধ। এরিয়া ৫১ এর ভেতর আজপর্যন্ত বেসামরিক কেউ ঢুকতে পারেননি। যদি কেউ ঢুকেও থাকেন তাহলে তিনি ফিরে এসেছেন লাশ হয়ে । এরিয়া ৫১ এর কর্মকতারা জানান, এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো পরীক্ষামূলক উড়োজাহাজ তৈরি, অস্ত্রশস্ত্রের সিস্টেমের পরীক্ষাকরণ এবং উন্নতিসাধন সমর্থন করা।

 কিন্তু এই স্থানটির আশেপাশের বাসিন্দারা জানান ভিন্ন কথা। তাদের দাবী এরিয়া ৫১ এর আকাশে ফ্লাইং সসারের মতো কিছু উড়তে দেখেছেন তারা। আবার অনেকেই এমন দ্রুতগতির বিমান উড়তে দেখেছেন যার গতি ও আকৃতি সাধারণ বিমান কিংবা যুদ্ধবিমান কোনোটার সাথেই যেন মিলে নেই। 

তো বিতর্কে ছাইয়ের মধ্যে যেন বাতাস ছড়িয়ে দিলেন এরিয়া ৫১ এর কর্মরত পদার্থবিজ্ঞানী বব লেজার । টিভি সাক্ষাৎকারে বব জানান, 'সেখানে রেটিকুলাম-৪ নামক জ্যোতিষ্ক থেকে আসা এলিয়েন ও এক ফ্লাইং সসার রয়েছে। এলিয়েন বা ওই ভিনগ্রহের প্রাণীটির উচ্চতা সাড়ে তিনফুট । 

যার রোমহীন শরীর এবং বড় বড় কালো চোখ রয়েছে । এলিয়েনটির দেহ ব্যবচ্ছেদ করার পর এর ভেতরে ফুসফুস ও হৃৎপিন্ডের বদলে পাওয়া গেছে বিশাল এক পতঙ্গ।' এছাড়া বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে এখান থেকে ভিনগ্রহের প্রাণীদের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে বলে দাবি করেন অনেক কর্মকর্তা। পত্র-পত্রিকায় নানা সময়ে রহস্যময় এ জায়গাটিকে কেন্দ্র করে নানা মুখরোচক খবর বের হলেও সেগুলোকে বরাবরই এড়িয়ে গেছেন আমেরিকান সরকার ।



এরিয়া ৫১

"এরিয়া ৫১" এক রহস্যে ঘেরা নাম। এটা কোন প্রকৃতির সৃষ্টি রহস্য না বরং মানুষের সৃষ্টি সব থেকে রহস্যজনক স্থান গুলির মধ্যে একটি। (ইংরেজিঃ Area 51) একটি বিশাল (নেলিসের বিমান বাহিনী) সামরিক বাহিনীর অপারেশন ঘাটি, যার আয়তন ২৬,০০০ বর্গকিলোমিটার। 

এটি পশ্চিমা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে এবং লাস ভেগাস থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিম রেকেল গ্রামের কাছে অবস্থিত। এটি ঠিক গ্রুম হ্রদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত। দুর্ভেদ্য বেষ্টনীতে ঘেরা এ ঘাটির প্রবেশ পথে লেখা আছে অনধিকার প্রবেশকারীকে গুলি করা হতে পারে। আজ পর্যন্ত বেসামরিক কেউ দাবী করেনি তিনি এরিয়া ৫১ এ ঢুকেছেন। 

যদি কেউ ঢুকেও থাকেন তাহলে তিনি জীবিত আর বের হতে পারেন নি তা নিশ্চিত। আর এই রহস্যে ঘেরা স্থানটি কি সত্যি আছে? এ প্রশ্ন কিন্তু সবার মনে একবার হলেও উঁকি দিয়েছে। কেননা এই এরিয়া ৫১ এর অস্তিত্ব আমেরিকা ও সোভিয়েত উইনিয়নের মধ্যকার "স্নায়ুযুদ্ধ" (Cold War) সময়কালিন থেকে থাকলেও আমেরিকার সরকার এর অস্তিত্ব স্বীকার করেছে বেশি দিন না।



অতীতে কেউ যদি বিমান বাহিনির কাছে এই এরিয়া ৫১ সম্পর্কে জানতে যেয়ে কোন বার্তা পাঠাত তাহলে তাদের কাছে উপরে চিঠির মত একটি চিঠিতে জবাব দেওয়া হত। কোন ভাবেই তারা স্বীকার করত না এই এরিয়া ৫১ এর অস্তিত্ব।


দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদন,

১৮ই আগষ্ট ২০১৩ সাল, প্রথমবারের মত আমেরিকার সরকার স্বীকার করে নেয় যে, হ্যাঁ এই এরিয়া ৫১ এর অস্তিত্ব আছে। প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়,



"যুক্তরাষ্ট্র সরকার দেশটির এক গোপন সামরিক পরীক্ষার স্থান হিসেবে ‘এরিয়া ৫১’ নামে একটি এলাকার অস্তিত্ব অবশেষে স্বীকার করেছে। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) নথি থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মহাফেজখানা গত বৃহস্পতিবার ওই নথি অনলাইনে দেয়। নথিতে দেখা যায়, মার্কিন ইউ ২ গোয়েন্দা বিমানের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন হয়েছিল এরিয়া ৫১ নামের ওই গোপন পরীক্ষার স্থানেই। জায়গাটা নেভাডা অঙ্গরাজ্যের লাস ভেগাস শহর থেকে প্রায় ১০০ মাইল উত্তরে মোহাভে মরুভূমিতে। বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনি ভিত্তিক বিভিন্ন চলচ্চিত্রে এরিয়া ৫১ কে দেখানো হয়েছে ভিন গ্রহের প্রাণী ও অজানা ‘বিভিন্ন বস্তুর’ উড্ডয়নের স্থান হিসেবে। মার্কিন সামরিক বাহিনী এত দিন কখনোই এরিয়া ৫১ নামে কোনো স্থানের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেনি। তবে প্রকাশিত নথিতে ভিন গ্রহের প্রাণী বা এ জাতীয় কোনো কিছুর সঙ্গে এরিয়া ৫১ এর সম্পর্ক নেই বলে জানানো হয়েছে।"



কিন্তু এই স্বীকারক্তির অনেক আগেই এরিয়া ৫১ নিয়ে ঘটে গেছে অনেক কিছু। ষড়যন্ত্র তত্ত্বে (Conspiracy Theory) যারা বিশ্বাস করে তারা অনেক কিছু খুঁজে বের করেছে। কিন্তু তারপরেও কেউ জোর গলায় বলতে পারে না, যা খুঁজে পেয়েছে তার সব সত্যি। আসুন তাহলে এবার খুঁজে দেখা যাক এই এরিয়া ৫১ নিয়ে কি কি পাওয়া যায়। চলুন তবে শুরু করি।



খোদ যুক্তরাস্ট্রের জনগনের মধ্যে একে ঘিরে অনেক গল্প চালু আছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো এই স্থানে নাকি কোন এক সময় UFO হয়েছিল এবং এই UFO ওর মধ্যে থেকে ভীনগ্রহের প্রানীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে "UFO রহস্যের আবডালে ঘেরা যে বস্তু" লেখায় আলোচনা করা হয়ছে।



এছাড়াও গল্প, সিনেমা, টিভি প্রোগ্রাম ইত্যাদি নানাভাবে এই এরিয়া ৫১ এর কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে সেই UFO এর দূর্ঘটনার কথা যা রসওয়েল UFO (Unidentified Flying Object) দূর্ঘটনা (Roswell UFO Incident) নামে অভিহিত করা হয়।



১৯৯৬ সালে হলিউডের বিখ্যাত ছবি "ইনডিপেনডেন্স ডে" তে দেখানো হয়েছে যে এই ভীন গ্রহের প্রানীরা এরিয়া ৫১ এর উপর আক্রমন করেছে এবং এই ছবির শেষ দিকে দেখানো হয়েছে এই প্রানীদের ব্যাবহার করা বিশাল আকারের UFO কে উন্নত প্রযুক্তির মিসাইলের সাহায্যে ধংস করে দেয়া হয়। এই মিসাইল প্রযূক্তি তারা পেয়েছে রসওয়েলের দূর্ঘটনায় ধংস হওয়া সেই UFO থেকে।


স্যাটেলাইট থেকে তোলা এরিয়া ৫১ এর ছবি

এছাড়াও "হ্যাংগার ৫১" ছবির কাহিনীও এই এরিয়া ৫১ নিয়ে। এছাড়াও টেলিভিশন সিরিয়াল সেভেন ডের কাহিনী চিত্রায়ন করা হয়েছে এই এরিয়া ৫১ এর ভিতরে, যাতে দেখান হয় রসওয়েল থেকে উদ্ধার করা ভিন গ্রহের প্রযুক্তির সহায়তায় একটি NNA টাইম ট্রাভেল অপারেশন। ২০০৫ সনের আলোচিত ভিডিও গেমস এরিয়া ৫১ ও নির্মিত হয়েছে রসওয়েল এর কাহিনীকে কেন্দ্র করে।



এরিয়া ৫১ সর্ম্পকে খোদ যুক্তরাস্ট্র সরকার একেবারে নিশ্চুপ। এ বিষয়ে তারা জনগনকে কিছু তো জানাতে দেয়ই না, বরং বেসামরিক লোকদের এরিয়া ৫১ এলাকাতে প্রবেশ করাও সম্পূর্ন নিষেধ।



এই জন্য এই স্থান সর্ম্পকে মানুষ তেমন কোন খবর জানে না। এ ছাড়াও এরিয়া ৫১ আগে এর ভিতরে যে সব স্থাপনা আছে তার ও তেমন ভাল কোন ছবি পাওয়া যেত না, যে সব ছবি পাওয়া গেছে তা স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি। এরিয়া ৫১ একটি সামরিক এলাকা, এটি দূরবর্তী এডওর্য়াড বিমান ঘাটি (Edwards Air Force Base) থেকে আলাদা।



এরিয়া ৫১ এর মানচিত্র

এটি একটি বিশাল সামরিক বিমান ঘাটি এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য পরীক্ষামূলক বিমান এবং অস্ত্র পদ্ধতি উন্নয়ন এবং পরীক্ষা।



এরিয়া ৫১ এর ব্লুপ্রিন্ট

এটি মার্কিন বিমান বাহিনীর একটি বিশাল প্রশিক্ষন (NTTR নেভেদা টেস্ট এন্ড ট্রেনিং রেঞ্জ) কেন্দ্র। অস্থায়ী ভাবে একে বলা হয় নেইলস এয়ার ফোর্স রেঞ্জ (NAFR)। এই ঘাটি পরিচালনা করে নেইলস এয়ার ফোর্স বেসের ৯৯ এয়ার বেস উইং। এর একটি অশং এই বেস থেকে ১৮৬ মাইল (৩০০ কিঃমিঃ) দূরে মোজাভ মরুভূমিতে অবস্থিত এডওয়ার্ডস বিমান ঘাটিতে অবস্থিত এর নাম এয়ার ফোর্স ফ্লাইট টেস্ট সেন্টার (AFFTC)।



এর নাম এরিয়া ৫১ এই নাম সরকারি ভাবে CIA ব্যাবহার করে।এছাড়াও এর অন্য অনেক গুলি নাম আছে যেমনঃ ড্রিম ল্যান্ড (Dream Land), প্যারাডাইস রেঞ্চ (Pradise Ranch), হোম বেস (Home Base), ওয়াটার টাউন স্ট্রিপ (Watertown Strip), গ্রুম লেক (Groom Lake)। এ ছাড়াও কিছুদিন আগে এর আরো একটি নাম দেয়া হয় হোমি এয়ার পোর্ট (Homey Airport)।



এরিয়া ৫১

এই স্থানটি নেলস মিলিটারি অপারেশন এরিয়ার অর্ন্তগত। এই স্থানের চারদিকের আকাশ অন্য সবার জন্য নিষিদ্ধ, এই আকাশসীমা (R-4808N) হিসাবে পরিচিত। পাইলটরা এই এলাকার আকাশকে বলে “দি বক্স” অথবা “দি কনটেইনার”।


গাড়ি পার্ক করার স্থান

এটি অন্যসব বিমান ঘাটির মতো সাধারন কোন বিমানঘাটি নয় এবং এখানে সাধারন কোন কাজও হয় না। এখানে চরম গোপনীয়তার মধ্যে সামরিক বাহিনীর জন্য এমন সব অস্ত্র, বিমান, ক্ষেপনাস্ত্র তৈরী করা যা অন্য কেউ জানে না। এক কথায় বলা যায় অত্যন্ত শ্রেণীবদ্ধ সামরিক/প্রতিরক্ষা বিশেষ এক্সেস প্রোগ্রাম Special Access Programs (SAP)। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো নতুন বিমান অস্ত্র পদ্ধতি বা গবেষনা প্রকল্পের জন্য উন্নয়ন, টেস্টিং, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। মার্কিন বিমান বাহিনী ও CIA এর দ্বারা এই প্রকল্প অনুমোদিত।



এরিয়া ৫১ সর্ম্পকে মার্কিন সরকার ১৪ জুলাই ২০০৩ পর্যন্ত কোন কিছু স্বীকার করেনি। পরর্বতিতে মার্কিন সরকার স্পস্টভাবে Concedes (বিভিন্ন আদালতে নথিভুক্ত এবং সরকারি নির্দেশ) শুধু এইটুকু বলেছে যে গ্রুম লেকের কাছাকাছি একটি "অপারেটিং অবস্থান" আছে এর বাইরে অতিরিক্ত আর কোন তথ্য জনগনকে জানানো হয়নি।


সরকারি যে ম্যাপ আছে (যেই ম্যাপ জনগন দেখতে পারে) সেখানে এরিয়া ৫১ এর অবস্থান উল্লেখ্য করা নেই। মার্কিন জিওলজিক্যাল উপগ্রহ মার্কিন ভূপৃস্টের যে ম্যাপ তৈরী করেছে সেখানে শুধু গ্রুম লেকের অবস্থান দেয়া আছে।



নেভেদার যোগাযোগ মন্ত্রনালয় বেসামরিক বিমান চলাচলের যেই ম্যাপ তৈরী করে সেই ম্যাপে শুধু উল্লেখ্য করা থাকে বিশাল একটি এলাকার আকাশ উড্ডয়ন নিষিদ্ধ একে বলা হয় “নেইলস উড্ডয়ন নিষিদ্ধ আকাশসীমা”। এছাড়াও মার্কিন সরকারের প্রকাশিত যে কোন ম্যাপে এই এরিয়া ৫১ এর কথা উল্লেক্ষ করা নেই।



মার্কিন সরকারের অবাধ তথ্য অধিকারের সুযোগ নিয়ে ১৯৬০ সালে মার্কিন গোয়েন্দা উপগ্রহ “করোনা” নার সাহায্যে এরিয়া ৫১ এর ছবি তোলে এই ছবিতে ৫১ এর ভিতরকার সবকিছু প্রকাশ হয়ে পড়ে। সাথে সাথে মার্কিন সরকার সেই ছবি মুছে ফেলে।



একই ভাবে মার্কিন “টেরা” উপগ্রহ ৫১ এর অনুরুপ ছবি তুলে তা প্রকাশ করে, মার্কিন সরকার সেই ছবি ২০০৪ সালে মুছে ফেলে। সেই সময় এই ছবি মাইক্রোসফট ও টেরা স্যাটেলাইটের সার্ভারেও ছিল সেখান থেকেও এই ছবি মুছে ফেলা হয়। পরবর্তীতে “নাসার” ল্যান্ডস্যাট ৭ উপগ্রহের সাহায্যে ৫১ এর ছবি তোলা হয়, বর্তমানে এই ছবিটিই সরকারি ভাবে প্রকাশিত এরিয়া ৫১ এর ছবি।



কিন্তু এত কিছু চেস্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি। রাশিয়ার গোয়েন্দা উপগ্রহ “ইকনস” ও রাশিয়ার বেসামরিক উপগ্রহ আমেরিকা রাশিয়ার ঠান্ডা যুদ্ধের সময় এই এরিয়া ৫১ এর ভিতরে কি হচ্ছে তা জানার জন্য (রাশিয়ার নিজেদের প্রয়োজনে) এর উচ্চ রেজল্যুশনের ছবি তোলে। এই ছবিতে ৫১ এর ভিতরকার প্রায় সবকিছু প্রকাশ হয়ে পড়ে। বর্তমানে এরিয়া ৫১ এর ভিতরকার ছবি আর গোপন নেই নেটে এর প্রায় সব ছবি পাওয়া যায়।



এই ছবিতে দেখা যায় যে এরিয়া ৫১ এর ভিতরে সাতটি রানওয়ে আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় যে রানওয়ে 14R/32L এটি লম্বায় প্রায় 23,300 feet (7,100 m)। অন্য রানওয়ে গুলি পীচের তৈরী এর মধ্য 14L/32R রানওয়ের দৈর্ঘ্য 12,000 feet (3,700 m), রানওয়ে 12/30 এর দৈর্ঘ্য 5,400 feet (1,600 m)।



অন্য চারটি রানওয়ে সল্ট লেকের মধ্যে অবস্থিত। এর মধ্যে 09L/27R ও 09R/27L রানওয়ের দৈর্ঘ্য প্রায় 11,450 feet (3,490 m), আর অন্য দুইটি 03L/21R ও 03R/21L, দৈঘ্য প্রায় 10,000 feet (3,000 m)। এছাড়াও আছে হেলিপ্যাড।



এরিয়া ৫১ এর ঘাঁটি

ছবিতে আরো দেখা যায় বড় বড় গুদাম ঘর, আবাসিক এলাকা,ফায়ার স্টেশন,বিশাল আকারের পানির ট্যাংকি, বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রন টাওয়ার, খেলাধুলা করার জন্য টেনিস এবং বেসবল কোর্ট। আরো আছে যোগাযোগের জন্য বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট ডিশ।


এরিয়া ৫১ এ রাডার ডিস

সাদা রং করা অনেকগুলি সরকারি ট্রাক ও ভ্যান পার্কিং এরিয়ায় রাখা আছে। বেশ কয়েকটি বোয়িং 737 বিমান রানওয়েতে দাড়িয়ে আছে।খুব সম্ভবত এই বিমানে করে কাজ করার জন্য শ্রমিকদের আনা নেয়া করা হয়।



এরিয়া ৫১ এ জ্বালানি তেলের ট্যাংক

অন্য একটি স্থানে কালো রং করা একটি F 16 যুদ্ধ বিমানকে পার্ক করা অবস্থায় দেখা যায়। এই কালো রং করা যুদ্ধ বিমান মার্কিন বিমান বাহিনী সাধারনত রাত্রি কালিন অভিযানে ব্যাবহার করে। কালো রং করা অনেক গুলি হেলিকপ্টারকে পার্ক করা অবস্থায় দেখা যায়।



নিয়ন্ত্রন টাওয়ার

এখানে অন্য আর পাঁচটি সাধারন বিমান ঘাটির মতো বিশাল আকারের হ্যাঙ্গার আছে। ধারনা করা হয় এরিয়া ৫১ এর ভিতরে যে সব অত্যাধূনিক বিমান এবং স্যাটেলাইট তৈরী করা হয় সেগুলিকে মানুষের চোখের আড়ালে এবং মরুভূমির তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য এই হ্যাঙ্গারগুলিকে ব্যাবহার করা হয়।



হ্যাঙ্গার

এরিয়া ৫১ এর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা অনেক শক্তিশালী। এই বেসের আনুমানিক ১৫৫ মাইল উত্তর এবং উত্তর পূর্বকোনে ৯৪০০ ফুট উঁচু “বেলডে” নামক একটি পাহাড়ের চূড়ায় বিশাল একটি রাডার স্থাপনা আছে। কিন্ত এই রাডারটি কি ধরনের তা জানা যায়নি। তবে ধারনা করা হয় এটি আকাশ পথ নজরদারী রাডার ARSR 4 (Air Route Surveillance Radar) এই ধরনের রাডার মার্কিন বিমান বাহিনী ব্যাবহার করে।



এটি শুধু একটি রাডার নয় একসাথে অনেক গুলি রাডারের একটি নেটওর্য়াক ব্যাবস্থা। এই রকম আরো একটি রাডার আছে গ্রুম লেকের উওর দিকে আর একটি পাহাড়ের চুড়ায় মাটি থেকে প্রায় ৪৩০০ ফুট উপরে। এই রাডার গুলি পরিচালনা করার জন্য কোন মানুষের প্রয়োজন নেই এই রাডার সাইটের সব স্বয়ংক্রিয়।



এরিয়া ৫১ এ ঢোকার জন্য কোন পিচের রাস্তা নেই। শুধু একটি মাটির রাস্তা আছে যা নেভেদার হাইওয়ে ৩৭৫ সিস্টেমের সাথে সংযোগ করা। এই রাস্তাটি প্রায় ৩৫ মাইল লম্বা, এর মধ্যে পশ্চিম এবং উওর পশ্চিম দিকে ১০ মাইল পড়ে এই রাস্তার এক মাথা বন্দ।



এরিয়া ৫১ এর মূল গেট

এরিয়া ৫১ এর মূল গেট ঘাটি থেকে প্রায় ২৫ মাইল দূরে অবস্থিত। এই গেটের কাছে বিশাল এক সাইন বোর্ডে বড় করে সতর্কবাণী সাইন জানায় যে প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং "ফোটোগ্রাফি নিষিদ্ধ" এলাকা।


জেনে নেই এই এরিয়া ৫১ এর নিরাপত্তা ব্যাবস্থার একটু ঝলক। এত সুরক্ষিত স্থান, নিরাপত্তাও সর্বাধুনিক। এর এলাকার চারিপাশে না আছে কোন দেয়াল বা কোন বেড়া। শুধু আছে কয়েকটি সাইনবোর্ড। কিন্তু সবার অলক্ষ্যে কাজ করে অনেক প্রযুক্তি।


 যেমনঃ Mobile CC Camera, Motion detector (নড়াচড়া পর্যবেক্ষক), Laser detector (লেজার পর্যবেক্ষক), Sound detector (শব্দ পর্যবেক্ষক) আর সব থেকে আধুনিক Smell detector (ঘ্রান পর্যবেক্ষক) আর এছাড়া আকাশ পথ দেখার জন্য রয়েছে রাডার। এই ঘ্রান পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে আসে পাশে থাকা যে কোন মানুষ বা বন্য প্রানীর অস্তিত্ব তারা পর্যবেক্ষন করতে পারে। এখন মনে করেন, আপনি কোন ভাবে ঢুকে গেলেন. আর আপনার অস্তিত্ব ধরা পরবে এই সেন্সর গুলিতে তা নিশ্চিত থাকেন। আর ধরা পড়লেই চলে আসবে সুরক্ষায় নিয়জিত বাহিনী। 


সুরক্ষায় যারা থাকে তারা আবার পদাতিক বাহিনী (Army) বা বিমান বাহিনীর কোন পোষাক পরা থাকবে না। এরা শুধু মাত্র এরিয়া ৫১ এর সুরক্ষার জন্য নিয়জিত। তবে এদের আচার আচারন সামরিক বাহিনীর লোকদের মতই। এখানে অনেক উপরের নীতি নির্ধারকদের অনুমতি বাদে প্রবেশ সম্পুর্ন নিষেধ আর ঢুকলেই তার মৃত্যু অনেকটাই অবধারিত। 

কেননা ক'দিন আগেও যে স্থানের কোন অস্তিত্ব ছিল না কাগজ কলমে সেখানে সাধারন আইন কানুন মানা হয় না। তাই আপনার কোন বিচার হবে না কোন আদালতে। মাঠেই আপনার বিচার, মাঠেই আপনার শাস্তি। মানবাধিকার এখানে কোন মূল্য রাখে না। 

এবার ধরুন আপনি কোন মতে এই সব সুরক্ষা ব্যাবস্থাকে কাটিয়ে ভিতরে ঢুকলেন। এবার আরো বড় সমস্যা। মনে রাখবেন এটি মরুভূমির মধ্যে অবস্থিত। আর আপনাকে পারি দিতে হবে প্রচন্ড গরমে শুকিয়ে যাওয়া গ্রুম লেক। এখানে যদি আপনি অবস্থান করতে যান তাহলে দিনে আপনাকে ৪ গ্যালন পানি পান করতে হবে। তা না হলে আপনি ৪ দিনের বেশী টিকে থাকতে পারবেন না। 

আর রাতের বেলা সম্মুক্ষিন হবেন শীতের। অর্থাৎ এত কিছু নিয়ে কোন ভাবেই আপনি সুরক্ষা দেওয়ার ভেদ করতে পারবেন না। আর ধরুন আপনি একটা গাড়ি নিয়ে কোন এক ভাগ্যের জোরে পার করলেন সব সুরক্ষা ব্যাবস্থা। এখন আপনাকে পারি দিতে হবে এই গ্রুম লেক। গাড়ি চালাচ্ছেন মনের সুখে।

 ভাবছেন একটানে চলে যাবেন এরিয়া ৫১ এর প্রানকেন্দ্রে। কিন্তু আপনি যাচ্ছেন শুকিয়ে যাওয়া এক লেকের উপর দিয়ে। আপনার পিছে উড়ছে বালি। আর অনেক দূর থেকেই বোঝা যাবে আপনার অবস্থান। এখন বুঝলেন প্রাকৃতিক ভাবেও এই এরিয়া ৫১ কেমন সুরক্ষিত।



এরিয়া ৫১ এর আশপাশের বাসিন্দাদের অনেকে অনেক রকম কথা বলেছে। তাদের অনেকের দাবী এরিয়া ৫১ এর আকাশে ফ্লাইং সসারের মত মত কিছু উড়তে তারা দেখেছেন। আবার অনেকেই নাকি এমন দ্রুতগতির বিমান উড়তে দেখেছেন যার গতি সাধারণ বিমান বা যুদ্ধবিমান কোনোটার সাথেই মিলে না।



তবে এসব বিতর্ককে আরও ঘনীভূত করেছেন এরিয়া ৫১ এ কর্মরত পদার্থ বিজ্ঞানী বব লেজার। 
এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন এরিয়া ৫১ এমন কিছু মৌলিক পদার্থ নিয়ে গবেষণা করা হয় যা আবিষ্কারের ঘোষণা এখনও দেওয়া হয় নি। তিনি অবশ্য কিছু ধোয়াটে বক্তব্য দিয়েছেন একটি মৌলিক পদার্থ নিয়ে। তার মতে সুপারনোভা বা বাইনারি স্টার সিস্টেম থেকেই সম্ভবত একটি মৌল সংগ্রহ করা হয়েছে।
 যার মাত্র ২.২ পাউন্ড কিন্তু এটি দ্বারা ৪৭টি ১০ মেগাটন হাইড্রোজেন বোমা বানানোর জন্য যথেষ্ট। ওখানে নাকি একটি টাইম মেশিন আছে। টাইম মেশিনে এই মৌলটি রাখা হলে টাইম মেশিনটি সময়কে স্থির করে রাখতে পারে। তারা নাকি সময় স্থির করে রাখার পরীক্ষা চালিয়ে সফলও হয়েছেন। 

তার মতে টাইম মেশিনটি ঐ মৌলিক পদার্থটিকে ব্যবহার করে কোন এক ভাবে অ্যান্টিম্যাটার তৈরি করে এবং তারফলে বিপুল শক্তি উৎপাদিত হয়। অ্যান্টিম্যাটার রিয়েক্টরে শক্তি উৎপাদনের ফলে বস্তুর নিজস্ব মহাকর্ষ বলের সৃষ্টি হয় এবং নিজস্ব শক্তিতে তা বিদুৎ বেগে ছুটতে পারে এবং এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নাকি ওখানে ফ্লাইং সসার তৈরির গবেষণা চলছে।


তবে বব সবচেয়ে বড় বোমা ফাটান এই বলে সেখানে নাকি এলিয়েন দের নিজে ধ্বংস হয়ে যাওয়া এক ফ্লাইং সসার আছে। ওখানে এলিয়েনটির ব্যবচ্ছেদ করে নাকি পাওয়া গেছে ঐ প্রাণীটি এসেছে রেটিকুলাম ৪ নামক জ্যোতিষ্ক থেকে। প্রাণীটির উচ্চতা সাড়ে তিন ফুট শরীর রোমহীন কালো বড় বড় চোখ এবং শরীর কৃশকায়। দেহ ব্যবচ্ছেদ করে নাকি ফুসফুস ও হৃৎপিন্ডর বদলে বিশাল এক পতঙ্গ পাওয়া গেছে।



তবে এতসব বিতর্কই শেষ নয়। এরিয়া ৫১ নিয়ে চলমান বিতর্কের সব চেয়ে বড়টি হল মানুষের চাঁদে যাওয়া নিয়ে নাটক। মানুষ চাঁদে গিয়েছে এ নিয়ে নাটকের কি আছে? আপনারা হয়ত তা বলবেন। 
কিন্তু দুনিয়াতে প্রচুর সন্দেহবাদী যাদের ধারনা মানুষ কখন চাঁদে যায়নি। পুরো নাটকটি সাজানো হয়েছে এই এরিয়া ৫১ এরভিতর। মানুষ প্রথম চাঁদে গিয়েছিল ১৯৬৯ সালে, এর পর আজ পর্যন্ত একবারও কেন মানুষ চাঁদে যায় না? মজার ব্যাপার হচ্ছে এত বিতর্ক চললেও আমেরিকান সরকার এসব কোনোকিছুই স্বীকার করেনি আজ পর্যন্ত। তাতে সন্দেহ না কমে বরং আরো বেড়েছে। এ নিয়ে আরেকটি পোষ্টে বিস্তারিত আলোচনা করব।



এরিয়া ৫১ বিশ্বের কাছে এটি মার্কিন সরকারের এক বিশাল সামরিক বাহিনীর অপারেশন ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও অনেকে এটিকে "এরিয়া অফ কন্সপেরেসি" অথবা "ষড়যন্ত্রের এলাকা" বলে থাকে। ধারণা করা হয়, কোল্ড ওয়ার বা স্নায়ু যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমেরিকা লোক চক্ষুর অন্তরালে উন্নত মানের যুদ্ধ বিমান এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরির গবেষণা এবং পরীক্ষা চলতো এ অঞ্চলে। জায়গাটিতে জনসাধারনের প্রবেশ নিষেধ হলেও "ন্যাশনাল জিওগ্রাফি" এ অঞ্চলের কিছু ছবি প্রকাশ করে।


একটি টাইটানিয়াম এ ১২ স্পাই বিমানের প্রটোটাইপ রাডার পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে,

একটা ঐতিহাসিক সূত্র থেকে জানা যায়, ১৯৫০ এবং ১৯৬০ সালের দিকে অক্সকার্ট নামে একটা প্রকল্পের আওতায় তৈরি হয় A12 বিমান। এই বিমানটি ছিল U2 নামের একটি স্পাই বিমানের উত্তরসূরী এবং বর্তমান SR71 BLACKBIRD স্পাই বিমানের পূর্বরুপ।



বিমানটির বিশেষত্ব ছিলো, এটি রাডারের হাতে চিহ্নিত না হয়ে ঘন্টায় ২২০০ মাইল (৩৫৪০ কিঃমিঃ) বেগে উড়বার ক্ষমতা ছিল। ৯০০০০ হাজার ফুট উপর থেকে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরার মাধ্যমে মাটিতে থাকা ১ফুট দৈঘ্য সমান বস্তুর ছবি তোলার ক্ষমতা ছিল এই বিমানটির। কিন্তু আমেরিকার সরকার একে আরো উন্নত করতে গিয়ে এক বিশাল দুর্ঘটনার সৃষ্টি করে। দ্রুত হস্তক্ষেপের কারণে সরকার ব্যাপারটি লুকিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়।


এ ১২ বিমানের ধ্বংসাবশেষ দুটি ইঞ্জিন, ছিন্নভিন্ন পেছনের ফিউজলাজ,

পরীক্ষামূলক বৈমানিক কেন কলিন্স (এরিয়া ৫১ এ যার ছদ্মনাম কেন কলমার) ন্যাশনাল জিওগ্রাফীকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান ওই দিনের ঘটনা। তিনি ওই দিন বিমানটির পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে সম্পৃক্ত ছিলেন। হঠাৎ সব কিছু উলোটপালোট হয়ে পড়ে যখন তিনি খুব লো অ্যাল্টিচ্যুড এ বিমানের সাবসনিক ইঞ্জিনটিকে পরীক্ষা করতে শুরু করেন। ২৫০০০ ফিট উচ্চতায় আকস্মিকভাবে বিমানের মাথা উপরের দিকে উঠতে থাকে তারপর উল্টে যায় এবং অনুভূমিক ঘুরতে শুরু করেন। এ ধরণের পতনের হাত থেকে উড়োজাহাজকে রক্ষা করবার উপায় নেই। আর তাই তিনি বের হবার সিদ্ধান্ত নেন।



আকাশ থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে রেসপন্স টিমকে,

প্যারাসুটের মাধ্যমে যখন মাটিতে নামতে সামর্থ হন তখন তিনি বিস্মিত হয়ে দেখেন স্থানীয়দের বেশে তিনজন লোক তার জন্য পিকআপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এরা কলিনকে ধ্বংসাবশেষের কাছে নিয়ে যেতে চাইল। কিন্তু কলিন তাদেরকে নিয়ে উল্টো পথে রওনা দেন এবং তাদের জানান যে বিমানে পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে এর কারন এই ধরণের গল্প আগে থেকেই তৈরি করে রাখা হয়েছিল।



সরকারি কর্মকর্তারা একটু পরে এসে জায়গাটি পরিস্কার এবং ধামাচাপা দেবার কাজ শুরু করে। পরের দিন সকালের আগেই সমস্ত ধ্বংসাবশেষ একটা ট্রাকের মাধ্যমে এরিয়া ৫১ তে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তী অর্ধশতকের মধ্যে কেউ এই জায়গাটিতে আর আসেনি।


এ-১২ এর সমস্ত প্রমাণ ভারী যন্ত্র ব্যবহার করে সরানো হচ্ছে,

তবে অ্যারোস্পেস বিশেষজ্ঞ পিটার মারলিনের মতে ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ ডায়নামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেবার চিন্তা ভাবনা ছিল যাতে কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে তা চিহ্নিত করা সম্ভবনা হয়। আজ এ ঘটনাকে লুকিয়ে রেখে আর কোন সুবিধা পাওয়া যাবে না বিধায় সিআইএ এই ছবি গুলো প্রকাশ করেছে বলে মনে করেন ইতিহাসবিদ ডেভিড রবার্জ। ২০০৭ সালে অক্সকার্ট প্রকল্প সংক্রান্ত অনেক তথ্য প্রকাশ পায়। এর মধ্যে ছিলো এয়ার ফোর্সের কাছ থেকে নয়টার মধ্যে থেকে একটা A12 বিমান তারা অধিগ্রহন করেছে যা এখন সিআইএ এর প্রধান কার্যালয়ে শোভা পাচ্ছে।


ক্রেনের মাধ্যমে সমতল ট্রাকে এ-১২ এর ধ্বংশাবশেষ তোলা হচ্ছে,

যদিও সিআইএ ঘটনার কিছু ছবি প্রকাশ করেছে তথাপি এ ব্যাপারে কারা জড়িত ছিল বা কিভাবে এটি সম্পন্ন হলো সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি। অ্যারোস্পেস ঐতিহাসিক পিটার মারলিন, দুর্ঘটনার জায়গাটি কয়েকবার প্রদর্শন করেছেন। তার মতে A12 এর ফিউজলাজ এবং পাখা ব্লো টর্চ দিয়ে কেটে আলাদা করে ট্রাকে তোলা হয়, সাথে তোলা হয় লেজ এবং আর যে সকল বড় বড় যন্ত্রাংশ ছিল সেগুলোকে। পড়ে থাকা ছোট ছোট যন্ত্রাংশ গুলোকে বক্সে ভরা হয়েছিল।


পরিস্কার করবার আগে যাতে বিমান থেকে দেখা না যায় তাই তারপুলিন দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে,

পরিস্কার করার আগে যাতে কোন বিমান থেকে কিছু দেখা না যায় তাই তারপুলিন দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। যখন দুর্ঘটনাটা ঘটে তখন অক্সকার্ট প্রকল্পটি খুব গোপনীয় প্রকল্প ছিলো, এটি প্রকাশ হলে আমেরিকার শত্রুরা বিকল্প বা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিয়ে ফেলতো তাই সরকার এ ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়।


ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টাইটানিয়ামের টুকরো,

ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টাইটানিয়ামের টুকরো আজও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চারিদিকে। পিটার মারলিন জানান, এলাকা ঘুরে এ ধরনের অনেক টুকরা তিনি দেখতে পেয়েছেন। তিনি এখানে বিমানের পাখা এবং ককপিটের কিছু অংশও পেয়েছেন যাতে এখনো 'স্কাঙ্ক অয়ার্ক্স' এর ছাপ দেয়া আছে। স্কাঙ্ক অয়ার্ক্স ছিল প্রতিরক্ষা বিভাগের একটা ভাগ।




সমাপ্ত ---------

মওদুদ আহমেদ



Post a Comment

0 Comments