Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

পৃথিবির বিখ্যাত কিছু রহস্যময় এবং রহস্যেঘেরা স্থান, অষ্টম -পর্ব । "Mowdud's World"



পৃথিবির বিখ্যাত কিছু রহস্যময় এবং রহস্যেঘেরা স্থান
                                 

                                               অষ্টম  -পর্ব


পৃথিবির বিখ্যাত কিছু রহস্যময় এবং রহস্যেঘেরা স্থান,   অষ্টম  -পর্ব ।  "Mowdud's World"



 

বহুকাল আগে থেকেই ভারত রহস্যময়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষ এই রহস্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। ভারতীয় সাহিত্যে, লোকগানে, গল্পে, ধর্মে সবখানেই রহস্যের ছড়াছড়ি। তাঁর উপর আছে অশিক্ষা আর কুসংস্কার এর মেলবন্ধন যা কিনা আবার কোন অব্যাখ্যাত ঘটনার গায়ে রহস্যের তকমা লাগানোর সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর। ভারতীয় যোগী-সন্নাসীরা আজও, এই আধুনিক যুগে বিভিন্ন রহস্যময় আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন আর মানুষের ধারণা তারা বিভিন্ন ধরনের অব্যাখ্যাত শক্তির অধিকারী হয়েছেন সাধনার দ্বারা।



কথা না বাড়িয়ে চলুন দেখে নেই কিছু রহস্যময় ঘটনা আর স্থানের পরিচয়। আর ভাই-বোনেরা শুরুতেই বলে রাখি, বিশ্বাস অবিশ্বাস সবই যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। কারও জোর করে বিশ্বাস করার কিছু নেই আর কেউ বিশ্বাস করলে তাকে বেকুব বলে হাসি দেবারও কিছু নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে রহস্যে বিশ্বাসী। আমার মনে হয় ব্যাখ্যার অতীত কিছু ঘটনা আজও আছে বিধায় পৃথিবীটা এখনো পানসে হয়ে যায় নি। সৃষ্টিকর্তা রহস্যময় পথে কাজ করেন সবসময়, তিনি আমাদের সামনে রহস্য রেখে দেন যাতে মানুষ বুঝতে পারে তাঁর থেকেও সুপিরিয়র অস্তিত্ব বর্তমান, আর তিনি এমন কিছু ঘটাতে পারেন যা ব্যাখ্যা করা মানুষের অসাধ্য। আমার কাছে প্রাকৃতিক রহস্যগুলো সবসময় সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতার নিদর্শন বলে বিবেচিত।



১. হিমালয় রহস্য (অমর মানুষ, ইয়েতি, যোগী, ভূত, লোহিত তুষার)


হিমালয় রেঞ্জ যতটা বড় ঠিক তত বেশিই এর রহস্যের পরিমান। হিমালয় অমর এক প্রজাতির আবাস এমন ধারণা করা হয়। তিব্বত এবং নেপালের হিমালয়ান পার্টে ইয়েতি নামক কুৎসিত তুষারমানবেরা বসবাস করে বলে ধারণাটা জনপ্রিয়। অনেক পর্বতারোহী রহস্যজনক লোহিত তুষার দেখেছেন বলে ঊল্লেখ করেছেন। দেখে নাকি মনে হয়, বরফের উপর রক্ত বা লাল কোন কিছু স্প্রে করা হয়েছে, যার ফলে ছোপ ছোপ লাল দাগ ফুটে উঠে তুষারের উপর। হিমালয়ের গোলকধাঁধা সমতুল্য অঞ্চলে লুকানো আশ্রমে রহস্যময় ধ্যানী যোগীদের অসংখ্য গল্প প্রচলিত আছে (আসলে কি সেগুলো শুধুই গল্প!! এত গল্পের অল্প কিছু অংশও যদি সত্যি হয়ে থাকে তাতেই এনাফ। দুনিয়ার এত জায়গা থাকতে ওই হিম ঠাণ্ডার মধ্যে বসে কিসের এত ধ্যান তাদের!! আমার মনে হয় যে, ধ্যানের উচ্চতর লেভেলে উঠে গেলে মানুষ এমন কিছু জিনিস অর্জন করতে সক্ষম, যা সাধারনের কাছে জাদুর সমতুল্য এবং সেগুলোর ব্যবহার খুব বিপদজনক। তাই এত লুকোচুরি। ভাবতে কিন্তু আমার ভালই লাগে)। হাজার হাজার মানুষ পর্বতের শিখর ছোবার অভিপ্রায়ে মৃত্যুবরণ করেছে এই হিমালয়ে। ইন্ডিয়ান আর্মির সৈন্যরা মৃত পর্বতারোহী আর সৈন্যদের দেখেছেন বলে দাবি করেছেন অনেকবার।



২. কুলধারা- রাজস্থান (ভূতের গ্রাম)


কুলধারা গ্রামটা ;ভূতের গ্রাম, বলে খ্যাত যা কিনা ১৮২৫ সাল থেকে পরিত্যাক্ত। গ্রামবাসীরা যারা এই গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়, তাদের অভিশাপ বহন করে চলেছে গ্রামটা। কুলধারা পশ্চিম রাজস্থান এর জয়সলমীর থেকে ১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। গ্রামটা এখন ধ্বংসপ্রাপ্ত। গ্রামটা পলিওয়াল ব্রাহ্মণদের দ্বারা ১২৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, যারা ছিল খুব ধনী গোত্র এবং তাদের ব্যাবসায়িক আর কৃষিসংক্রান্ত জ্ঞানের জন্য সর্বজনবিদিত ছিল। কিন্তু ১৮২৫ সালে কুলধারা এবং এর আশেপাশের আরও ৮৩ টি গ্রামের অধিবাসীরা এক রাতের ভিতরেই উধাও হয়ে যায়। স্রেফ উধাও। কারও কোন টিকিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। লোকগাথা অনুযায়ী, রাজ্যের মন্ত্রী সেলিম/সালিম সিং, একবার গ্রাম পরিদর্শনে এসে গ্রামের সর্দারের মেয়ের প্রেমে পড়ে যান এবং বিয়ে করতে চান (দুনিয়ার যত গ্যাঞ্জাম, তার বহু ঘটনার পিছে একটা করে মেয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। পুরো হিউম্যান হিস্টোরি জুড়ে যেমন চরিত্রহীন পুরুষদের দেখা গেছে, তেমনি লাস্যময়ী ট্রিকি নারীদেরও কোন কমতি নেই)। মন্ত্রী হুমকি দেয়, যদি তাঁর সাথে বিয়ে না দেয়া হয় তবে গ্রামের উপর প্রচুর কর ধার্য করা হবে। সালিম সিংয়ের সাথে বিয়ে ঠেকাতে গ্রামের সর্দার অন্য ৮৩ টা গ্রামের লোকসহ গ্রামত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু রহস্যটা হল, কেউই তাদের চলে যেতে দেখেনি বা কোথায় তারা গিয়েছে কেউই জানেনা। তারা স্রেফ ভ্যানিসড(POOF!! like a pile of ash, blown by wind)।



৩. কোট্টায়াম, ইদ্দুকি- কেরালা (লোহিত বৃষ্টিপাত)


কেরালার কোট্টায়াম এবং ইদ্দুকির দক্ষিনের জেলাগুলোতে এক অস্বাভাবিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করা যায় ২০০১ সালের ২৫শে জুলাই থেকে ২৩শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, সেটা হল বৃষ্টির পানির লাল রং। রংবহুল বৃষ্টিপাত কেরালাতে দেখা যায় ১৯৮৬ সালের প্রথমার্ধ থেকে এবং তারপর থেকে বেশ কয়েকবার, যার মধ্যে সবচেয়ে সাম্প্রতিকটা হল ২০১২ সালের জুলাই মাসে। ২০০৬ সালে কেরালার এই ঘটনা মিডিয়ার আকর্ষন কাড়তে সক্ষম হয় যখন মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা দাবি করেন যে, রঙ্গিন পার্টিকেল গুলো ছিল ;বহির্জাগতিক কোষ(extraterrestrial cell);। ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ এর নিচে দেখা যায়, বৃষ্টির পানি থেকে পৃথক করা সলিড পিগমেন্ট গুলোর সাথে জীবদেহের কোষের মিল রয়েছে! প্রাথমিক অফিসিয়াল রিপোর্টে বলা হয়, এক ধ্বংসপ্রাপ্ত উল্কার দ্বারা এই পিগমেন্ট বিস্তার লাভ করেছে, কিন্তু পরে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা যায়, trentopholia জেনাসের অন্তর্গত লাইকেন- গঠনকারী এলজির(algae)র স্পোরের সাথে আরও বেশি মিল রয়েছে এদের। আরও অনুসন্ধানে আবিষ্কৃত হয় যে, অত্র এলাকার গাছপালায়, পাথরে, এমনকি ল্যাম্পপোস্টে এই ধরনের এলজির প্রচুর পরিমানে উপস্থিতি রয়েছে।



৪. বেঙ্গল সোয়াম্প- পশ্চিমবঙ্গ (আলেয়া- ভূতুড়ে আলো)


আলেয়ার আলো বা জলাভূমির ভূতুড়ে আলোগুলো হল পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় জেলেদের দেখা জলাভুমির অব্যাখ্যাত কিছু আলো। এই আলোগুলো জেলেদের দ্বিধান্বিত করে, যার ফলে তারা সঠিক দিকনির্দেশ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। কেউ যদি একবার জলাভূমির এই আলেয়াকে অনুসরণ করতে শুরু করে, তবে তারা ডুবে মারাও যেতে পারে। অনেক মৃতদেহ পাওয়া গেছে জলাভূমির কুলে, বলা হয় এরা আলেয়ার ছলনার শিকার। স্থানীয়রা বিশ্বাস করে, জলাভুমিতে বিচরণ করা এই ভূতুড়ে আলোগুলো আসলে সেইসব জেলেদের আত্মা বা ভূত যারা মাছ শিকার করতে গিয়ে প্রান হারিয়েছে। মাঝে মাঝে আলোগুলো জেলেদের দ্বিধায় ফেলে দেয় আবার মাঝে মাঝে তাদের আসন্ন বিপদের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করে (এক্ষেত্রে অনেকে হলিউডের এনিমেশন মুভি brave এ দেখানো will-o-the-wisp এর মিল পেতে পারেন। রাজকুমারী মেরিডাকে কয়েকবার বিপদের হাত থেকে বাঁচায় এরা, আবার সঠিক পথেরও সন্ধান দেয়)।



৫. বান্নি গ্রাসল্যান্ড রিসার্ভ – Rann of Kutch (ছির বাত্তি)



বান্নি গ্রাসল্যান্ড রিসার্ভ গুজরাটের দক্ষিণ প্রান্তে rann of kutch এর লবনাক্ত সমভূমিতে অবস্থিত। এটা একটা ঋতুভিত্তিক জলজ তৃণভূমি যা কিনা প্রতিবছর মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে তৈরি হয়। এখানে রাতের বেলায় অব্যাখ্যাত রহস্যজনক অদ্ভুত আলোর নাচ দেখতে পাবার প্রচুর ঘটনার উল্লেখ আছে, যাকে স্থানীয়রা ;ছির বাত্তি; হিসেবে অভিহিত করে। বলা হয় এই আলোগুলো তেলের বাতির আলোর মতই উজ্জ্বল যা কিনা রং পরিবর্তন করে নীল, লাল, হলুদ বর্নধারন করতে পারে এবং দেখতে নাশপাতি আকৃতির চলন্ত বলের মত। তারা তীরের মত দ্রুতগতিতে চলতে পারে, আবার হঠাত করে স্থির দাঁড়িয়েও থাকতে পারে। স্থানীয় লোকগাথা অনুযায়ী, ;ছির বাত্তি; গুলো হল তৃণভূমির ;জীবনের অংশ; এবং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তাদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। কিছু লোক উল্লেখ করেছে যে, মাঝেমাঝে বাতিগুলো তাদের অনুসরণ করেছে জলাভূমির ভিতর দিয়ে চলার সময়। স্থানীয়রা ছাড়াও বিদেশীরা এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের সৈন্যরাও এই বাতি দেখেছে বলে উল্লেখ করেছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, জলা থেকে উত্থিত মিথেন গ্যাসের জারনের ফলে এই আলোর উতপত্তি হয়।



৬. গঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্র ডেল্টার অব্যাখ্যাত শব্দ (Mistpouffers, Barisal Guns)



Mistpouffers অথবা Barisal Guns হল একধরনের অব্যাখ্যাত শব্দ যার সাথে ;সনিক বুম; এর মিল রয়েছে এবং পৃথিবী জুড়ে পানির কাছাকাছি জনপদগুলোতে এসব শব্দ শোনা গেছে বলে প্রমান রয়েছে। বিশেষ করে ভারতে তাদের শোনা গেছে গঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্রের ;ডেল্টা রিজিয়ন; এ। সুপারসনিক জেট (শব্দের চেয়ে উচ্চগতিসম্পন্ন বিমান) এর সনিক বুম এর সাথে যদিও এদের মিল রয়েছে, কিন্তু রহস্যময় ব্যাপার হল এই ধরনের ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় এমনকি বিমান আবিষ্কার এর আরও অনেক আগে থেকেই। টি ডি লাটুচে নামের এক ব্রিটিশ অফিসার ১৮৯০ সালে তাঁর জার্নালে এই সম্পর্কে লেখেন। তিনি লেখেন, “Barisal Guns ভূকম্পনজনিত ধাক্কার ফলে উতপন্ন হয়, যদিও ভূমিকম্প ছাড়া এবং বড় ধরনের ভুকম্পনের আগে এদের শোনা গেছে। এই ঘটনার কিছু ব্যাখ্যা আছে, যার ভিতরে আছে ভূমিকম্প, পাথরের ভাঙ্গন, কাদার আগ্নেয়গিরি, গ্যাসের উদগিরনজনিত বিস্ফোরণ, ঝড়বাহিত শব্দ, সুনামি, উল্কা, দুরবর্তী বজ্রপাত এবং তথাকথিত booming sand.; এখনো এই রহস্যময় শব্দগুলো শোনা যায় এবং যা প্রতিনিয়ত গবেষকদের ধাঁধায় ফেলে যাচ্ছে।



৭. কঙ্গকা লা পাস- আকসাই ছিন, লাদাখ (ইন্দো-চাইনীজ ইউ এফ ও ঘাটি)



হিমালয়ের কঙ্গকা লা পাস আকসাই ছিনের ইন্দো-চাইনিজ সীমান্তে অবস্থিত। চীনের অন্তর্গত অংশ আকসাই ছিন নামে এবং ভারতীয় অধিকৃত অংশ লাদাখ নামে পরিচিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে কম প্রবেশাধিকারমূলক এলাকাগুলোর একটি এবং দুই দেশের ভিতর চুক্তি অনুযায়ী এখানে কোন বর্ডার পেট্রল এর ব্যবস্থা নেই। সীমান্তের উভয়পাশের স্থানীয়রাই বিশ্বাস করে এই এলাকায় সমন্বিতভাবে দুই দেশের একটা ভুগর্ভস্থ ইউ এফ ও ঘাটি রয়েছে (যা বলা হল তা না থাক কিছু একটা তো আছে। হিমালয় তো দেখি আসলেই রহস্যময়!!!) স্থানীয়রা ভুগর্ভ থেকে বেরিয়ে আসা ইউ এফ ও দেখেছে অনেকবার, এমনটাই দাবি(যা রটে, তার কিছু তো বটে)। পর্যটকেরা অদ্ভুত ত্রিকোণাকৃতি আলোকবিশিষ্ট নিঃশব্দ আকাশযান দেখেছে মাটি থেকে উঠে আসতে এবং সম্পুর্ন খাঁড়া ভাবে আকাশে উঠে গেছে সেগুলো। স্থানীয় গাইডরা বলে এটা এখানের কোন নতুন জিনিস না বরং খুবই সাধারন ঘটনা! পর্যটকেরা এখানে দুই দেশের ভিতর ভ্রমনের অনুমতি ব্যতীত প্রবেশ করতে পারে না।



২০০৬ সালের জুনমাসে গুগল আর্থের স্যাটেলাইট ইমেজগুলো এই এলাকার(চাইনিজ অংশ) ১:৫০০ স্কেলের বিস্তৃত মডেল দেখায় যেখানে দেখা যাচ্ছে অনেক বিল্ডিং, যেগুলোর সাথে একটা মিলিটারি ফ্যাসিলিটিরই তুলনা হতে পারে। আকসাই ছিন এমন একটা এলাকা যেখানে ইউরেশিয়ান এবং ইন্ডিয়ান টেকটনিক প্লেট মিলে এক ;কনভারজেন্ট প্লেট বাউন্ডারী; তৈরি করেছে, মানে হল একটা প্লেট আরেকটার নিচে অবস্থান করছে এবং এই ঘটনা এই এলাকাকে সেইসব বিরল এলাকার একটায় পরিণত করেছে যেখানকার ভূপৃষ্ঠ অন্য জায়গার তুলনায় দ্বিগুণ পুরু(এবার ভাবুনতো ২০১২ মুভিটার কথা। সারা পৃথিবী যখন একের পর এক ভুমিকম্পে টালটামাল তখন মানুষের শেষ ভরসা সেই জাহাজ তিনটা কোথায় ছিল! জ্বি, এই হিমালয়েই। সৃষ্টিকর্তা পাহাড়গুলোকে তৈরি করেছেন পৃথিবীর পেরেক হিসেবে। যদি প্রশ্ন করেন সেখানেই কেন ভুমিকম্পের প্রকোপ বেশি তাহলে আমাকে একটি প্রশ্ন করতে দিন। ;হাসপাতালে তো মানুষেরা সুস্থ হয়ে ওঠে, তাহলে সেখানে কেন রোগীর সংখ্যা বেশি?



৮. রুপকুন্দ লেক- উত্তরখন্দ (কঙ্কাল হ্রদ)



রুপকুন্দ লেক হল এক হিমবাহ হ্রদ যা উত্তরখন্দের হিমালয়ান রেঞ্জের (আবার হিমালয়!!) ৫০০০ মিটার উপরে অবস্থিত। ১৯৪২ সালে এক বনরক্ষী রুপকুন্দের তীরে শতশত মানবকঙ্কাল দেখতে পান। বছরের পর বছর ভারতীয় এবং ইউরোপিয়ান বিজ্ঞানীরা এই মৃত্যুরহস্য সমাধান করার জন্য বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে। বেশ কয়েকটা তত্ত্ব আছে এই সংরক্ষিত কঙ্কালগুলোর রহস্য ব্যাখ্যার জন্য। এক তত্ত্ব অনুযায়ী এই কঙ্কালগুলো আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সময়ে মৃত্যুবরণকারী জাপানি সৈন্যদের। কেউ কেউ বলেন এগুলো কাশ্মীরের জেনারেল জোরাওয়ার সিং এবং তাঁর সৈন্যদের কঙ্কাল, আবার আরেক তত্ত্ব মতে এগুলো মুহাম্মদ তুঘলকের অসফল Garhwal হিমালয় অধিকার অভিযানের ফসল। এগুলোর কার্বন ডেটিং করে বয়স নির্ধারন করা হয়েছে ১২শ-১৫শ শতাব্দীর ভিতরে। তিব্বতের সাথে এই এলাকার ভিতর দিয়ে বাণিজ্যিক পথের কোন ঐতিহাসিক প্রমান নেই। এক তত্ত্ব বলে এগুলো কনৌজ এর রাজা জশদেওয়াল এর লোকদের। তারা হিমালয়ের নন্দদেবী পাহাড়ে তীর্থে যাচ্ছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। পথে তারা প্রচণ্ড তুষার ঝড়ের কবলে পড়েন এবং খোলা পাহাড়ের গায়ে কোন আশ্রয় না পেয়ে প্রত্যেকে মৃত্যুবরন করেন।



৯. কদিনহি- কেরালা (জমজদের গ্রাম)


কদিনহি গ্রামটা কালিকুট থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত এবং প্রায় ২০০০ টা পরিবারের আবাস। মুসলিম প্রধান গ্রামটা জমজ বাচ্চা জন্মের উচ্চহারের জন্য পরিচিত। ২০০৯ সালে এই গ্রামে ২২০ জোড়া জমজ বসবাস করত এবং ট্রিপলেট (তিনজন একই চেহারার) ছিল দুই সেট! যদিও গ্রাম্য ডাক্তার বলেন জমজের জোড়া ৩০০ থেকে ৩৫০ হবে। তিনি বলেন এই ঘটনার শুরু তিন প্রজন্ম আগে থেকে এবং হারটা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে প্রতি বছর। আরও একটা রহস্যময় ব্যাপার হল গ্রামের মহিলাদের যদি অন্য কোন দুরবর্তী এলাকায় বিয়ে হয় তাতেও তাদের ভিতরে জমজ বাচ্চা জন্ম দেয়ার হার উচ্চই থাকে।




সমাপ্ত_______________

সংকলনঃ--- মওদুদ আহমেদ।

Post a Comment

0 Comments